মোশারফ হোসাইন তযু-নিজস্ব প্রতিবেদক: আটত্রিশ বছর আগে মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর কেনা জমি উদ্ধারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ষাটোর্ধ্ব স্ত্রী জুবেদা আক্তার। ভূমি দস্যুর কবল থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের ৫২ শতাংশ জমি উদ্ধারের জন্য প্রয়াত মুুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল মোড়লের স্ত্রী জুবেদা আক্তারের দিন কাটছে সমাজপতি আদালত ও পুলিশের পেছন পেছন ঘুরে। অবশেষে ওই জমিতে কোনো স্থাপনা তৈরি না করতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছেন আদালত। কিন্তু আদালতের সে নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে ওই জমিতে বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী ইউনিয়নের টেপিরবাড়ির মাদবর বাড়ি মোড়ে স্থানীয় শফিকুল ইসলাম মোড়ল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওই জমি জবর দখল করে নিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল মোড়ল তার সহোদরা নূরুন্নেছা খাতুনের কাছ থেকে ৬৯৫১ নাম্বার দলিলে ১৯৮১ সালের ৫ নভেম্বর ওই জমি ক্রয় করে ভোগদখলে যান। পরবর্তী সময় মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল মোড়ল মৃত্যু বরণ করলে নজরুল হক মেম্বার জমিটা জবরদখলে নিয়ে রাখে। পরে জুবেদা আক্তার পিতৃহারা ৩ ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।
সম্প্রতি ওই জমি স্থানীয় শফিকুল ইসলাম মোড়ল জবর দখলে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে। এক পর্যায়ে জবর দখল করেও ফেলে। সম্প্রতি সেখানে বিল্ডিং তৈরি করতে শুরু করে।
জুবেদা আক্তার জানান, ওই জমি উদ্ধারের জন্য তিনি সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে বহু ঘুরেছেন। পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাননি। শফিক মোড়লের টাকার কাছে তার জমি উদ্ধারের আকুতি চাপা পড়ে আছে। ওই জমিতে যাতে কোনো ধরণের স্থাপনা তৈরি করা না হয় সে জন্য তিনি বিজ্ঞ দ্বিতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে গত ২৫ নভেম্বর একটি আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে আদালত ওই জমিতে একটি অস্থায়ী নিষেজ্ঞা জারি করেন। আগামী বছর ৬ ফেব্রুয়ারি উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নিদের্শ দিয়েছেন। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে শফিক মোড়ল তার ক্ষমতার দাপটে প্রকাশ্যে জমিতে বিল্ডিং গড়ে তোলছেন। এর আগে বহুবার ওই জমি নিয়ে গ্রাম্য সালিশ হয়েছে, সহকারী কমিশনারের ( ভূমি) কার্যালয়েও সালিশ হয়েছে। সবখানেই তার পক্ষে রায় দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রীপুর থানা পুলিশের কাছে আদালত থেকে পাঠানো নিষেধাজ্ঞার ওই কপি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। একজন পুলিশ অফিসার শফিক মোড়লকে স্থাপনা নির্মাণের জন্য নিষেধ করে যাওয়ার পরপরই আবার সে কাজ শুরু করেছে। বেদখল হয়ে যাওয়া স্বামীর কেনা জমি উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত শফিক মোড়ল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ইস্রাফিল মোড়ল তার চাচা। এই চাচার জমি তিনি নেন নি।